1G থেকে 6G: মোবাইল টেলিফোনির বিবর্তনের একটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

Mobile Generations


যদিও এটা সত্য যে, মোবাইল প্রযুক্তি 1970 এর দশক থেকে আমাদের সাথে আছে, তবুও এটি যে সকল মৌলিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বর্তমান অবস্থানে গেছে তা আমরা আজ পর্যন্ত যা জানি সেটি সত্যিকার অর্থে যথেষ্ট নয়।


এটা ঠিক, 50 বছর ধরে এটি চলছে, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে, তার ইতিহাস বেশিরভাগক্ষেত্রে ব্যবহারকারী বা আমাদের কাছে যথেষ্ট দৃশ্যমান।


মোবাইল টেকনোলজির প্রযুক্তিগত পরিবর্তনগুলি বেশিরভাগই সহজে আমাদের নজরে পড়ে যায়। যেমন পরিষেবা খরচ হ্রাস পাওয়া, এর কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি এবং টেকনোলজি অবস্থা পরিবর্তনের জন্য: 1G, 2G, 3G, 4G, 5G,? ইত্যাদি মান নির্ণয়।


মোবাইল টেলিফোনি সেক্টরের জন্য এই মান গুলো সত্যিকার অর্থে কি বোঝায়? এবং এই আদ্যক্ষরগুলির অর্থ কী এবং তারা কী বোঝায়?


G মানে Generation আমরা সবাই জানি, কিন্তু কখনও অতীতের দিকে ফিরে জানার চেষ্টা করেছেন কি আগামীর 6G, বর্তমান 5G ও 4G এর আগে 3G, 2G এবং 1G এর শুরুটা কেমন ছিল? আজ আমরা এই পোস্টের মাধ্যমে প্রত‍্যেক জেনারেশনের সঙ্গে মোবাইল টেকনোলজির ক্ষেত্রে কি কি পরিবর্তন হয়েছে তা জানার চেষ্টা করব। 



1G: যেখান থেকে শুরু হয়েছিল

মোবাইল নেটওয়ার্কের যাত্রা শুরু হয় প্রথম প্রজন্ম - অথবা 1G হিসেবে। তখনকার সময়ের সাধারণ মানুষ খুবই আগ্রহী হয়ে উঠেছিল নতুন এ টেকনোলজি হাতে পাওয়ার জন্য। কিন্তু তারা জানত না যে ভবিষ্যতে একেই 1G নামে ডাকা হবে। আমরা পুরোনো সিনেমা বা অন্য কোথাও প্রায়ই দেখে থাকি যে, আগেকার দিনে মানুষজন লম্বা অ্যান্টেনাওয়ালা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। সেসকল ফোনকেই ফার্স্ট জেনারেশন মোবাইল ফোন বলা হয়। 1G মোবাইল ফোনের টেলিকমিউনিকেশন স্পীড ছিল 24kb/s অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে 24 কিলোবাইট।


জাপানের নিপ্পন টেলিগ্রাফ এবং টেলিফোন (এনটিটি) এর কল্যানে বিশ্বের মানুষ প্রথম পরবর্তী প্রজন্মের বা 1G (প্রথমে পরবর্তী প্রজন্ম নামে প্রচলিত ছিল) এর সাথে পরিচয় হতে পেরেছিল এবং তাঁরা -1979 সালে টোকিওতে 1G পরিষেবা প্রথম চালু করে। 1984 সালের মধ্যে, এনটিটি পুরো জাপান জুড়ে 1G সেবা প্রদান চালু করে। 


1983 সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম 1G অপারেশন অনুমোদন করেছিল এবং মটোরোলার DynaTAC নামে প্রথম 'মোবাইল' ফোন সে সময়ে ব্যবহারকারীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। কানাডা এবং যুক্তরাজ্যের মতো অন্যান্য দেশ কয়েক বছর পরে তাদের নিজস্ব 1G নেটওয়ার্ক চালু করেছে।


1G প্রযুক্তি বেশ কিছু অপূর্ণতার শিকার হয়েছে। সে সময়ে মানুষের ডেটা তেমন কোন কাজের ছিল না এজন্য বেশী স্পিড এরও প্রয়োজন ছিল না। তাছাড়া এ জেনারেশনের আরেকটি বড় অপূরন ছিল মেসেজ। এ জেনারেশনের ফোন থেকে কোন মেসেজ পাঠানো যেত না। এ টেকনোলজির মাধ্যমে শুধুমাত্র এ্যানালগ পদ্ধতিতে ফোন ব্যবহার করা যেত, তখনও এ টেকনোলজি ডিজিটাল হয়ে উঠেনি। ফোনে তখন শুধু এ্যানালগ সিগন্যাল আদান প্রদান করা হত এবং এর মাধ্যমে ভয়েস কল করা হত কিন্তু এসএমএস আদান প্রদান করা সম্ভব ছিল না। 


এছাড়াও নেটওয়ার্ক কভারেজ খারাপ ছিল এবং শব্দের মান ছিল নিম্ন। বিভিন্ন অপারেটরের মধ্যে কোন রোমিং সাপোর্ট ছিল না এবং বিভিন্ন সিস্টেম বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জে পরিচালিত হওয়ায় সিস্টেমগুলির মধ্যে কোন সামঞ্জস্য ছিল না। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপারটি হল কলগুলি এনক্রিপ্ট করা হয়নি, তাই রেডিও স্ক্যানার এর মত যন্ত্রের সাহায্যেও যে কেউ কল করতে পারত।


এই ত্রুটিগুলি এবং মোটা 3,995 ডলার মূল্য (আজকের অর্থের 9,660 ডলার) সত্ত্বেও, DynaTAC এখনও 1990 সালের মধ্যে বিস্ময়করভাবে বিশ্বব্যাপী 20 মিলিয়ন গ্রাহক সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিল। 1G এর সাফল্য দ্বিতীয় প্রজন্মের জন্য পথ সুগম করে, যা সঠিকভাবে বললে 2G বলা হয়।


2G: সাংস্কৃতিক বিপ্লব

ফার্স্ট জেনারেশন ফোনের অপূর্নতা মেটানোর জন্য 90-এর দশকে মার্কেটে আসে 2G। দ্বিতীয় প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক বা 2G, 1991 সালে ফিনল্যান্ডে জিএসএম স্ট্যান্ডার্ডের অধীনে চালু করা হয়েছিল। এ জেনারেশনের ফোনে প্রথমবারের জন্য, কলগুলি এনক্রিপ্ট করা যেত এবং ডিজিটাল ভয়েস কলগুলি কম স্ট্যাটিক এবং ব্যাকগ্রাউন্ড ক্র্যাকিংয়ের সাথে উল্লেখযোগ্যভাবে স্পষ্ট ছিল।


কিন্তু 2G টেলিযোগাযোগের চেয়ে অনেক বেশি ছিল; এটি সাংস্কৃতিক বিপ্লবের চেয়ে কম কিছু করার জন্য ভিত্তি স্থাপন করতে সহায়তা করেছিল। 2G টেকনোলজির মাধ্যমে ইউজাররা তাদের ফোনে টেক্সট বার্তা (এসএমএস), ছবি বার্তা এবং মাল্টিমিডিয়া বার্তা (এমএমএস) প্রথমবারের পাঠাতে শুরু করে। এই টেকনোলজি মোবাইল ফোনকে যথেষ্ট কম্প‍্যাক্ট করতে সক্ষম হওয়ায় ইউজাররা এই ফোন পকেটে করে বহন করতে পারত। 1G এর এনালগ অতীত 2G দ্বারা উপস্থাপিত ডিজিটাল ভবিষ্যতের পথ দেখিয়েছে। এর ফলে ভোক্তা এবং ব্যবসায়ী উভয়ে এ টেকনোলজি ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছিল, যা আগে কখনও দেখা যায়নি। 


যদিও 2G এর স্থানান্তর গতি প্রাথমিকভাবে মাত্র 9.6kb/s ছিল, অপারেটররা মোবাইল সেল টাওয়ারের মতো নতুন অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করতে ছুটে আসে। যুগের শেষের দিকে, 64kb/s এর গতি অর্জনযোগ্য ছিল এবং EDGE সংযোগগুলি 500kb/s পর্যন্ত গতি সরবরাহ করেছিল। তুলনামূলকভাবে মন্থর গতি সত্ত্বেও, 2G ব্যবসায়িক দৃশ্যপটে বিপ্লব এনেছে এবং বিশ্বকে চিরতরে বদলে দিয়েছে।


3G: ‘Packet-Switching’ বিপ্লব

তৃতীয় প্রজম্মেে এসে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক স্পীড কিলোবাইট ছাড়িয়ে মেগাবাইটে পৌঁছে যায়। 2001 সালে জাপানের NTT DoCoMo প্রথম 3G সেবা চালু করেছিল। 2003-2004 সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সম্পূর্ণভাবে 3G বিস্তার লাভ করার পর মোবাইল ফোনে মাল্টিমিডিয়ার ব‍্যবহার শুরু হয়। এই জেনারেশন এর কারণে ইউজারদের ভয়েস কল ও এস‌এম‌এসের সুবিধা বেড়ে যায়। 3G আসার পর মোবাইল ফোনে 2mb/s অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে 2 এমবি পর্যন্ত স্পীড পাওয়া যেত।


3G টেকনোলজি ব্যবহারের মাধ্যমেই ফোনে ভয়েস কল ও এস‌এম‌এসের পাশাপাশি ইন্টারনেট উপভোগ করা শুরু হয়। এই সময় থেকেই Facebook এর মতো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল‍্যাটফর্ম , ভিডিও কনফারেন্সিং, ভয়েস ওভার আইপি (যেমন স্কাইপ) এবং YouTube এর মতো ভিডিও স্ট্রীমিং অ্যাপ এর মত নতুন পরিষেবা মার্কেটে আসা শুরু করে। কিন্তু স্লো স্পীড এর কারনে ইউটিউব ও এই ধরনের সার্ভিসগুলিকে বাফারিং এর সম্মুখীন হতে হত। যদিও 3G এর বর্ধিত ডেটা ট্রান্সফার ক্ষমতা 2G এর চেয়ে 4 গুণ দ্রুত ছিল। এই সমস‍্যার সমাধানের জন্য HSPA+ ও HSPA Turbo ভার্সন পেশ করা হয়, ফলে 100 এমবিপিএস পর্যন্ত স্পীড বেড়ে যায়।


3G স্পষ্টভাবে যোগাযোগ এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে বিপ্লব ঘটিয়েছে। এটি স্মার্টফোন তৈরির পাশাপাশি ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম এবং অন্যান্য মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনগুলি সৃষ্টিতে ব্যাপকভাবে কৃতিত্ব রেখেছে। থ্রিজি নেটওয়ার্ক এখনও পর্যন্ত ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। প্রকৃতপক্ষে, বিশ্বের অনেক টেলকো কোম্পানি এখনও 3G পরিষেবা এবং 3G ডেটা প্ল্যান দিচ্ছে।






4G: স্ট্রিমিং যুগ

3G টেকনোলজিকে আরও ফাস্ট করে তোলার জন্য 2009 সাল নাগাদ মার্কেটে 4G আসতে শুরু করে। স্টকহোম, সুইডেন এবং অসলো, নরওয়েতে 2009 সালে লং টার্ম ইভোলিউশন (LTE) 4G স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে 4G প্রথম নির্ধারন করা হয়েছিল। এটি পরবর্তীতে বিশ্বজুড়ে চালু করা হয় এবং লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারীর জন্য উচ্চমানের ভিডিও স্ট্রিমিংকে বাস্তব করে তুলেছিল। 4G দ্রুত মোবাইল ওয়েব অ্যাক্সেস (স্থির ব্যবহারকারীদের জন্য 1 গিগাবিট প্রতি সেকেন্ড পর্যন্ত) যা গেমিং পরিষেবা, এইচডি ভিডিও এবং হাই কোয়ালিটি ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের সুবিধা দেয়।


এতদিনে মোবাইল ফোন কম্পিউটারের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো ক্ষমতাসীন হয়ে উঠেছে এবং এক‌ই সঙ্গে ফোন হয়ে উঠেছে স্মার্টফোন। এই জেনারেশনে আরও এভোলিউশন ঘটিয়ে মার্কেটে আনা হল 4G LTE এবং 4G VoLTE। এই সময় ভয়েস কল, এস‌এম‌এস ও ইন্টারনেট ব্রাউজিং ছাড়াও ফোনে ভিডিও কল ফিচার চলে আসে।


শুরুতে যেখানে অ্যানালগ সিগন্যাল ব‍্যবহার করে ভয়েস কল করা হত, সেখানে এখন ইন্টারনেট ব‍্যান্ডের মাধ্যমে ভয়েস কল করার যুগ চলে এল। 4G নেট‌ওয়ার্কে ইন্টারনেট স্পীড বেড়ে 100mb/s অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে 100 এমবি ছুঁয়ে ফেলে। 4G মোবাইল টেকনোলজিকে সবচেয়ে বড় উন্নতি বলা যেতে পারে কারণ এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের বেশ কিছু রাস্তা খুলে যায় এবং আগামী দিনের নতুন আভাস পাওয়া যায়। 4G’র যুগে মোবাইল ফোনের মাল্টি ডিভাইস কানেক্টিভিটি সম্ভব হয়ে ওঠে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আমি বা আপনি যে স্মার্টফোন ব‍্যবহার করছি সেগুলি সব‌ই 4G স্মার্টফোন। বর্তমানে 4G নেট‌ওয়ার্কের সর্বোচ্চ স্পীড 2জিবিপিএস।


যদিও 4G সারা বিশ্বে একই মানদন্ডে বর্তমান, তবুও অনেক অঞ্চল 4G নেটওয়ার্ক প্যাচনেসে জর্জরিত এবং সেখানে 4G LTE অনুপ্রবেশ অনেক কম



Image Credit : flickr.com

5G : ইন্টারনেট অফ থিংস (IOT) যুগ


বিশ্বে 5G সূচনা হয়ে গেছে। 5G’র ক্ষেত্রে ইন্টারনেট স্পীড মেগাবাইট থেকে উঠে গিগাবাইটে পৌঁছে যাবে এবং এতে সর্বোচ্চ 20 জিবিপিএস অর্থাৎ 4G’র চেয়ে কমপক্ষে 100 গুণ বেশি স্পীড উপভোগ করা যাবে।


বিশ্বের অনেক দেশে 4G কভারেজ এত কম, তবু কেন টেক দুনিয়ার ফোকাস ইতিমধ্যে 5G তে স্থানান্তরিত হয়েছে?


5G তৈরিতে আসলে অনেক বছর হয়ে গেছে।


দক্ষিণ কোরিয়ার তিনটি কোম্পানি - KT, LG Uplus এবং SK Telecom - 2018 সালের ডিসেম্বরে বিশ্বে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে 5G পরিষেবা চালু করে এবং সেসময় সারা দেশে 2019 সালের মধ্যে একযোগে 5G সেবা চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এছাড়া বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশ 2020-2025 সালের মধ্যে নিজেদের দেশে 5G সেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে।


বাণিজ্যিকভাবে 5G এর পথচলা বিলম্ব হলেও এর শুরুটা অনেক পুরোনো। 2000 দশকের গোড়ার দিকে ডেভেলপাররা উপলদ্ধি করেন যে, 3G ও 4G নেটওয়ার্কগুলি অদুর ভবিষ্যতে বেশী ডাটা আদান প্রদানে কার্যকর হবে না। কারন 4G এর ডেটা আদান প্রদানের ল্যাটেন্সি সময় ছিল 40-60 মিলি সেকেন্ড। তাই বেশ কয়েকজন গবেষক মোবাইল নেটওয়ার্কের পরবর্তী প্রজন্মের বিকাশ শুরু করেন।


এ প্রেক্ষিতে 2008 সালে নাসা আইওটি এবং M2M প্রযুক্তির বিকাশের জন্য মেশিন-টু-মেশিন ইন্টেলিজেন্স (M2MI) কার্যক্রম চালু করেছিল, সেইসাথে এটি সমর্থন করার জন্য প্রয়োজনীয় 5G প্রযুক্তি বিকাশেও কাজ করে। একই বছরে, দক্ষিণ কোরিয়া একটি 5G Research and Development (R&D) প্রোগ্রাম তৈরি করেছিল এবং নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় 2012 সালে 5G-কে কেন্দ্র করে NYU ওয়্যারলেস প্রতিষ্ঠা করেছিল।


টেক রিপাবলিকের সাথে একটি সাক্ষাৎকারের সময়, কেভিন অ্যাশটন বর্ণনা করেছিলেন যে কীভাবে তিনি "ইন্টারনেট অফ থিংস" - বা সংক্ষেপে আইওটি শব্দটি প্রণয়ন করেছিলেন - 1990-এর দশকে প্রদত্ত পাওয়ারপয়েন্ট উপস্থাপনার সময় তিনি প্রক্টর এবং গ্যাম্বলকে আরএফআইডি ট্যাগ প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করতে রাজি করান।


Phrase টি সবার নজর কাড়ে এবং IOT-কে শীঘ্রই পরবর্তী বড় ডিজিটাল বিপ্লব হিসাবে অভিহিত করা হয়, যা লক্ষ লক্ষ সংযুক্ত ডিভাইসগুলি বিশ্বজুড়ে নির্বিঘ্নে ডেটা আদান প্রদানে সহায়ক হবে। অ্যাশটনের মতে, একটি মোবাইল ফোন শুধুমাত্র একটি ফোন নয়, এটি আপনার পকেটে আইওটি; এটি সংযুক্ত নেটওয়ার্ক সেন্সরগুলির একটি সংখ্যা, যা আপনাকে নেভিগেশন থেকে ফটোগ্রাফি থেকে যোগাযোগ এবং আরও অনেক কিছু সম্পন্ন করার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। ওয়াই-ফাই-সংযুক্তিতে সক্ষম যন্ত্রপাতি যেমন ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন এবং গাড়ি ইত্যাদি যা ‘এজ ডিভাইস' হিসাবে পরিচিত সেগুলি আইওটি এর আওতায় পরিচালিত করা যাবে। শুধুমাত্র এগুলির মধ্যে 5G এর IOT প্রযুক্তি সীমাবদ্ধ থাকবে তা নয় বরং বাল্ব, পাখা, ওভেন সহ আরো অন্যান্য যন্ত্রপাতি 5জির সঙ্গে কানেক্ট করা যাবে।


প্রকৃত অর্থে 5G হল আমরা যা জানি তা থেকেও অনেক বেশী। 


5G 1Gbps স্পিড বাধা অতিক্রম করেছে এবং এ প্রযুক্তি কমপক্ষে 1ms ল্যাটেন্সির নীচে গতি পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। এই সমস্ত উচ্চগতি সম্পন্ন ডিভাইসে খুব কম ব্যাটারি খরচ হয়ে থাকে! 


5G অন্যান্য প্রযুক্তির তুলনায় অনেক বেশি Spectrum এবং 4 ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড ব্যবহার করে। এগুলি শহর বা ইভেন্টের মতো মানুষের ভিড় বেশী এমন জায়গায় ব্যবহার করা হবে। অতিরিক্ত Spectrum এবং উচ্চ ক্ষমতা, বেশী ব্যবহারকারী, আরও বেশী ডেটা এবং দ্রুত সংযোগের সুবিধা দেবে।



5G এর পরিষেবাগুলিকে আমরা 3 ভাগে মূল্যায়ন করতে পারি:


  • যন্ত্র - যন্ত্র। মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই কোটি কোটি ডিভাইস সংযুক্ত হতে পারবে, প্রযুক্তি এমন উচ্চতায় যাবে যা আগে কখনও দেখা যায়নি। কারো নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই ডিভাইসগুলো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। 
  • অতি সুরক্ষিত যোগাযোগমাধ্যম। এ প্রযুক্তির সাহায্যে ট্রাক চালকেরা ঘরে বসে ট্রাক চালাতে পারবে। যা হবে অধিক নিরাপদ ও দ্রুতগামী।
  • উন্নত মোবাইল ব্রডব্যান্ড, উচ্চতর ইন্টারনেট গতি এবং অধিক কম ল্যাটেন্সি।


5G এর কল্যানে অনেক প্রযুক্তির উন্নতি হবে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, স্বায়ত্তশাসিত ড্রাইভিং, যোগাযোগ শিল্প এবং এর সাথে সংযুক্ত হাজার হাজার ডিভাইস সমূহের পরিষেবা উন্নত করতে এ প্রযুক্তি ভূমিকা রাখবে।




6G : সায়েন্স ফিকশন যুগ

IMT-2020 (5G), আন্তর্জাতিক মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম বিকাশের জন্য নিবেদিত একটি দল, 2019 থেকে 6G প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে।


6G প্রতি সেকেন্ডে 1TB পর্যন্ত ডাউনলোডের গতিতে পৌঁছাতে সক্ষম হবে এবং পানির নিচের যোগাযোগকে সহজ করতে পারবে।


6G আর কি অফার করতে পারে? এর সর্বোত্তম উত্তর হল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এটি স্মার্ট সিস্টেমগুলিকে ব্যবহারের মাধ্যমে কঠিন কাজগুলি সমাধান করতে সক্ষম হবে। অর্থাৎ, এটি তার নির্ভরযোগ্যতা এবং দক্ষতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করবে।


যদিও শক্তির সীমাবদ্ধতা আছে। হাজার হাজার সিস্টেম ক্রমাগত ডেটা সংগ্রহ করে প্রচুর শক্তি খরচ করে এবং আমাদের কাছে এখনো শক্তির বিকল্প উৎস প্রস্তুত নেই।


আগামী 10 বছরের মধ্যে এই প্রযুক্তি এবং কার্যকারিতা এবং পরিষেবার জন্য Terahertz spectrum ব্যবহারের কেমন হবে তা আমরা কল্পনাও করতে পারব না। আমি কেবল বলছি যে বিশ্বব্যাপী প্রধান খেলোয়াড়রা ইতিমধ্যে 2030 এর মধ্যে বাজারে আধিপত্য বিস্তারের জন্য নিজেদের অবস্থান উন্নত করার চেষ্টা করছে।



শেষ কথা


5G ভবিষ্যতের মোবাইল নেটওয়ার্ক হিসাবে কাজ করার জন্য প্রস্তুত, যা IoT কে বাস্তবে পরিণত করতে সহায়তা করে। ইতিমধ্যে বিশ্বের প্রথম সারির দেশসমূহ প্রায় সকলে 5G সেবার আওতায় চলে এসেছে। অন্যান্য দেশসমূহও এ সেবার আওতায় আসার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এর মধ্যে চীন 6G প্রযুক্তি বিকাশের প্রকল্প হাতে নিয়েছে; যা ইতিবাচক। 1G থেকে বর্তমান দিন পর্যন্ত প্রযুক্তিগত অগ্রগতির অবিচল অগ্রগতি ছাড়া এটি সম্ভব ছিল না। অ্যাশটন যেমন উল্লেখ করেছেন, আইওটি কেবল "ফ্রিজ টোস্টারের সাথে কথা বলা" নয়; এটি মানুষের উৎপাদনশীলতায় অগণিত বৃদ্ধি সহজতর করার একটি উপায়।


একটি সতর্কতা হল যে, 3G এবং 4G এর মতো পূর্ববর্তী প্রজন্মের বিপরীতে যা পূর্ববর্তী প্রজন্মের অবকাঠামো বন্ধ করে দিতে পারে, 5G প্রয়োগ করা অনেক বেশি ব্যয়বহুল এবং জটিল। 5G এর জন্য 4G এর চেয়ে অনেক বেশি বেস স্টেশন প্রয়োজন এবং এগুলি অবশ্যই একসঙ্গে কাছাকাছি অবস্থান করতে হবে, যা সম্ভাব্য সম্ভাব্য, এখনও অধ্যয়নরত, স্বাস্থ্য জটিলতার দিকে পরিচালিত করে। Bloomberg এর মতে, প্রযুক্তি শিল্পকে 5G উপযোগী করে আপগ্রেড করতে 200 বিলিয়ন ডলারেরও বেশি খরচ হতে পারে, যা সুবিধার তুলনায় খরচের পরিমান বেশী হতে পারে। 


আজকের পর্বে জেনারেশন শুরু হতে ভবিষ্যত কেমন হতে পারে তা উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। কেমন হয়েছে তা অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানানোর জন্য অনুরোধ করছি। আর পরবর্তীতে কেমন আর্টিকেল লিখলে আপনার উপকৃত হবেন তাও জানালে ভালো হয় এবং আমি সাধ্যমত তা শেয়ার করার চেষ্টা করব। 


আমি আগামী পোস্টে 6G নেটওয়ার্ক নিয়ে বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করব ... সাথে থাকুন!




    তথ্যসূত্রঃ

    2. BBC











    *

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
    নবীনতর পূর্বতন

    ads

    ads